Logo
আজঃ রবিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৫
শিরোনাম

সুস্থ জীবনের জন্য দোয়া ও আমল

প্রকাশিত:রবিবার ২৬ জানুয়ারী ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৫ | ১৪৯জন দেখেছেন

Image

ধর্ম ডেস্ক: সুস্থতাই সুখ-শান্তির মূল। অসুস্থ হওয়ার আগে সুস্থতাকে মর্যাদা দেওয়ার কথা বলেছেন নবিজি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম। সুস্থ থাকতে আল্লাহর কাছে কীভাবে আবেদন করতে হবে তাও শিখিয়ে দিয়েছেন তিনি। দুনিয়াতে সুস্বাস্থ্য, সুস্থতা, আমানতদারিতা, উত্তম চরিত্র ও সন্তুষ্টির জন্য আল্লাহর কাছে এভাবে প্রার্থনা করা যায়-

উচ্চারণ : আল্লাহুম্মা ইন্নি আসআলুকাছ ছিহ্হাতা ওয়াল ইফফাতা ওয়াল আমানাতা ওয়া হুসনিল খালক্বি ওয়াররিদা বিলক্বাদরি। (বায়হাকি, মুসনাদে বাজ্জার)

অর্থ : হে আল্লাহ! আপনার কাছে প্রার্থনা করছি সুস্বাস্থ্য, পবিত্রতা, আমানতদারীতা, উত্তম চরিত্র এবং তাকদিরের উপর সন্তুষ্টি থাকার। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে সুস্থ্যতা, পবিত্রতা, আমানতদারীতা এবং উত্তম চরিত্র লাভে ওই দোয়া মাধ্যমে সাহায্য লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।


আরও খবর



বিপিএলের পাঁচ দলের নাম প্রকাশ করল বিসিবি

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ০৬ নভেম্বর ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৫ | ২৫জন দেখেছেন

Image

অনলাইন ডেস্কঃ

আসন্ন বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল) টি-টোয়েন্টি ক্রিকেটে অংশগ্রহণকারী পাঁচ দলের নাম প্রকাশ করেছে বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ড (বিসিবি)। 

মালিকানা পরিবর্তনের সময় বিপিএল ফ্র্যাঞ্চাইজিদের নাম পরিবর্তন নতুন কিছু নয়। যা ভক্তদের হতাশ করে। 

বিপিএলের দ্বাদশ আসর পাঁচটি দল নিয়ে অনুষ্ঠিত হবে, সেটি দু’দিন আগেই ঘোষণা করেছিল বিসিবি। আনুষ্ঠিতভাবে আজ দলগুলোর নাম ঘোষণা করল বিসিবি। 

ফ্র্যাঞ্চাইজি নিবন্ধন ও মূল্যায়ন প্রক্রিয়া শেষ হবার পর টুর্নামেন্টে অংশগ্রহণের জন্য পাঁচ ফ্র্যাঞ্চাইজিকে অনুমোদন দিয়েছে বিপিএল গভর্নিং কাউন্সিল। 

পাঁচটি দলের মধ্যে দু’টির নাম অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে। ঐ দু’টি দল হল - ঢাকা ক্যাপিটালস এবং রংপুর রাইডার্স। ঢাকা ক্যাপিটালস পরিচালনা করবেন রিমার্ক হারলেন এবং রংপুর রাইডার্সের দায়িত্ব থাকবে বসুন্ধরা কিংসের হাতে। 

চট্টগ্রাম ফ্র্যাঞ্চাইজির মালিকানায় থাকছে ট্রায়াঙ্গেল সার্ভিসেস লিমিটেড। দলটির নাম দেওয়া হয়েছে চট্টগ্রাম রয়্যালস। 

নাবিল গ্রুপের মালিকাধীন রাজশাহীর নাম হবে রাজশাহী ওয়ারিয়র্স। এছাড়াও সিলেট টাইটান্স ‘ক্রিকেট উইথ সামি'-এর মালিকানাধীন থাকবে। 

যদিও প্রাথমিকভাবে পাঁচটি ফ্র্যাঞ্চাইজিকে মালিকানা দিয়েছে বিসিবি। তবে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে ১০ কোটি টাকার ব্যাংক গ্যারান্টি দেখাতে না পারলে ফ্র্যাঞ্চাইজিরা প্লেয়ার্স ড্রাফটে অংশ নিতে পারবে না বলে জানিয়েছে বিসিবির এক কর্মকর্তা। 

আগামী ১৭ নভেম্বর বিপিএলের প্লেয়ার্স ড্রাফট অনুষ্ঠিত হবে। বিপিএলের ১২তম আসর শুরু হবে ১৯ ডিসেম্বর এবং ১৬ জানুয়ারি ফাইনাল দিয়ে পর্দা নামবে।

বিপিএল দল :

১. ঢাকা ক্যাপিটালস
২. চট্টগ্রাম রয়্যালস
৩. রাজশাহী ওয়ারিয়র্স
৪. রংপুর রাইডার্স
৫. সিলেট টাইটানস


আরও খবর



শরণখোলায় সৌদি সরকারের পাঠানো দুম্বার মাংস বিতরণে অনিয়ম

প্রকাশিত:সোমবার ০৩ নভেম্বর ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ০৮ নভেম্বর ২০২৫ | ৭১জন দেখেছেন

Image

 স্ট্যাফ  রিপোর্টার:


বাগেরহাট শরণখোলায় সৌদি সরকারের পাঠানো দুম্বার মাংস বিতরণে দেখা দিয়েছে বড় ধরনের অনিয়ম ও রহস্যজনক গরমিল। উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন দপ্তরের (পিআইও) মাধ্যমে ২৯ টি মাদরাসায় ও এতিমখানায় গত শুক্রবার রাত ১১ টায় এই মাংস বিতরণ করা হলেও, সরবরাহ ও বিতরণের হিসাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য অমিল ধরা পড়েছে।


সূত্রে জানা গেছে, শরণখোলায় মোট ১০ কার্টুন দুম্বার মাংস এসেছে। প্রতিটি কার্টুনে ১০ প্যাকেট করে মাংস থাকার কথা, অর্থাৎ ১০ কার্টুনে মোট ১০০ প্যাকেট মাংস থাকার কথা ছিল। কিন্তু উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিস থেকে শরণখোলা উপজেলা প্রেসক্লাবে যে তালিকা সরবরাহ করেছে, সেখানে দেখা গেছে ২৯ টি মাদরাসায় বিতরণ করা হয়েছে মোট ৬০ প্যাকেট মাংস। হিসাব অনুযায়ী বাকি ৪০ প্যাকেট মাংসের কোনো তথ্য পাওয়া যাচ্ছে না। এছাড়া রাতের আধারে বণ্টনের প্রয়োজনীয়তা নিয়েও জনমনে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে।


এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিআইও মোঃ সোহাগ আকন বলেন, সব কার্টুনে সমানসংখ্যক প্যাকেট ছিল না, কোনো কোনো কার্টুনে ১০টির পরিবর্তে ৭ বা ৮টি প্যাকেট ছিল। তবে স্থানীয়দের প্রশ্ন— সৌদি সরকারের পক্ষ থেকে আন্তর্জাতিকভাবে প্রেরিত সিল করা কার্টুনে প্যাকেটসংখ্যা কমবেশি হওয়ার সম্ভাবনা কতটুকু? অনেকেই মনে করছেন, এই ব্যাখ্যা মোটেও গ্রহণযোগ্য নয় এবং পুরো বিতরণ প্রক্রিয়াতেই অস্বচ্ছতা রয়েছে। তালিকায় উল্লেখিত মাদরাসা ও এতিমখানা থেকে পাওয়া তথ্যেও দেখা গেছে, তালিকায় যে সংখ্যক প্যাকেট উল্লেখ করা হয়েছে, বাস্তবে তার সঙ্গে মেলে না। কোথাও বেশি, কোথাও আবার কম। দক্ষিন বাধাল মরহুম ছগির হোসেন হাফিজিয়া মাদ্রাসা এতিমখানা ও লিল্লাহ বোডিংয়ের নাম তালিকায় থাকলেও উক্ত মাদ্রাসার শিক্ষক হাফেজ মোঃ শরিফুল ইসলাম আদৌও কোন প্যাকেট পাননি বলে জানান।


এদিকে স্থানীয় সমাজকর্মী, সাংবাদিক, শিক্ষাবিদ ও সচেতন মহল বলছেন, সরকারি তত্ত্বাবধানে বিদেশি সহায়তার বণ্টনে এমন অসঙ্গতি প্রশাসনের ওপর জনগণের আস্থা কমিয়ে দেবে। তাদের দাবি, এই মাংস বিতরণের পুরো প্রক্রিয়াটি তদন্ত করে প্রকৃত সত্য বের করতে হবে। জনসাধারণের করের টাকায় পরিচালিত সরকারি দপ্তরের কাজে এই ধরনের অনিয়ম শুধু প্রশাসনিক নয়, নৈতিক ব্যর্থতাও নির্দেশ করে।


শরণখোলা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা হাবিবুল্লাহকে দুম্বার মাংস বিতরণে অনিয়ম সম্পর্কে জানতে ফোন করলে তিনি জানান, আমার কাছে বিষয়টি নিয়ে একাধিক অভিযোগ এসেছে তদন্ত সাপেক্ষে বিধি অনুযায়ী ব্যাবস্থা গ্রহন করা হবে।



মোঃ কামরুল ইসলাম টিটু 

বাগেরহাট শরনখোলা 


আরও খবর



২০ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন, মাহী বি চৌধুরীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা

প্রকাশিত:বুধবার ১৫ অক্টোবর ২০২৫ | হালনাগাদ:শনিবার ০৮ নভেম্বর ২০২৫ | ৮৮জন দেখেছেন

Image

অনলাইন ডেস্কঃ ২০ কোটি ৬৯ লাখ টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জন ও মানিলন্ডারিংয়ের অভিযোগে মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরীর বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া শুরু করেছে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক)।

আজ বুধবার দুদকের প্রধান কার্যালয়ে এক নিয়মিত মিডিয়া ব্রিফিংয়ে এ তথ্য জানান দুদকের মহাপরিচালক মো. আক্তার হোসেন। মামলার বাদী হিসেবে রয়েছেন দুদকের উপ-পরিচালক (মানিলন্ডারিং) মো. জাহাঙ্গীর আলম।

দুদক জানায়, আসামি মাহী বদরুদ্দোজা চৌধুরী তার দাখিলকৃত সম্পদ বিবরণীতে ৯ কোটি ৬৮ লাখ ৪৬ হাজার ৫শ’ টাকার সম্পদ অর্জনের তথ্য গোপন করে মিথ্যা ও ভিত্তিহীন ঘোষণা প্রদানসহ মোট ২০ কোটি ৬৯ লাখ ২৫৩ টাকার জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদ অর্জন করে তা নিজ ভোগ-দখলে রেখেছেন।

অভিযোগে বলা হয়, আসামি দুর্নীতির মাধ্যমে উপার্জিত অবৈধ অর্থের প্রকৃতি গোপন করার অসৎ উদ্দেশ্যে ৬৮ একর জমির বায়না অর্থ পরিশোধ করে নিজ নামে বায়না দলিল সম্পাদন করেন। পরবর্তীতে তিনি তার মালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান এভালন এস্টেট লিমিটেড-এর নামে জমিটি ক্রয় করে উক্ত অর্থ স্থানান্তর, রূপান্তর ও হস্তান্তরের মাধ্যমে মানিলন্ডারিং করেন।

দুর্নীতি দমন কমিশন আইন, ২০০৪ এর ২৬(২) ও ২৭(১) ধারা এবং মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইন, ২০১২ এর ৪(২) ও ৪(৩) ধারায় শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়েছে।


আরও খবর



গাইবান্ধায় প্রবল আপত্তির মুখেও প্রিপেইড মিটার সংযোগ, বেড়েছে গ্রাহক ভোগান্তি

প্রকাশিত:রবিবার ১৯ অক্টোবর ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৫ | ৮০জন দেখেছেন

Image

মোঃ জিল্লুর রহমান : গাইবান্ধায় গ্রাহকদের প্রবল আপত্তি সত্তে¡ও নেসকোর নির্বাহী প্রকৌশলীদের গোয়াতুর্মিতে ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার সংযোগ দেয়া হচ্ছে। কিন্তু এই প্রিপেইড মিটারে চরম গ্রাহক ভোগান্তি বেড়েছে। হাজার টাকা রিচার্জে তাৎক্ষণিক কেটে নেয়া হচ্ছে ২০০ থেকে ২৫০ টাকা। কোন খাতে কত টাকা কাটা হচ্ছে তার সুস্পষ্ট ব্যাখ্যাও জানেন না গ্রাহকরা। এসব বিষয়ে কথা বলতে রাজি নন বিদ্যুৎ বিতরণকারী প্রতিষ্ঠান নেসকোর গাইবান্ধার নির্বাহী প্রকৌশলীরা। ফলে গ্রাহকদের মাঝে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। 

গাইবান্ধা সদর উপজেলার বল্লমঝাড় ইউনিয়নের খোলাবাড়ি গ্রামের রহিম উদ্দিন জানান, তিনি প্রিপেইড মিটারে এক হাজার টাকা রিচার্জ করলে সঙ্গে সঙ্গে ভ্যাট ট্যাক্স বাবদ কেটে নেয়া হয় ২৫০ টাকা। তারপর মাত্র তিনদিন বিদ্যুৎ ব্যবহারের মাথায় বাকিটাও শেষ হয়ে যায়। যেখানে একই বিদ্যুৎ ব্যবহারে আগে পোস্ট পেইড মিটারে এক মাসে তার বিল আসতো ৮শ থেকে ৯শ টাকা, এখন মাসে আড়াই হাজার টাকা রিচার্জ করতে হচ্ছে। একই অভিযোগ করেন শহরের পলাশপাড়ার গৃহিনী তৃষ্ণা রাণী। আগে তার মাসিক বিল আসতো ৭শ টাকা আর এখন প্রিপেইড মিটারে ৫শ টাকা করে চারবার রিচার্জ করতে হয়।   

রহিম উদ্দিন ও তৃষ্ণা রাণীর মতো এমন অস্বাভাবিক বিলের কবলে গাইবান্ধার হাজার হাজার মানুষ। যেসব এলাকায় প্রিপেইড মিটার বসানো হয়েছে, সেসব এলাকায় অতিরিক্ত বিদ্যুৎ বিল কাটার অভিযোগ গ্রাহকদের। আপত্তি আছে ডিমান্ড চার্জ নিয়েও। 

গ্রাহকদের অভিযোগ, একদিকে টাকা রিচার্জ করলে অন্যদিক দিয়ে শেষ হয়ে যায়। হাজার টাকা রিচার্জ করলে সাড়ে ৬শ থেকে ৭শ টাকা মিটারে যোগ হয়। বাকি টাকা হাওয়া হয়ে যায়। নানান রকম চার্জ কাটা হলেও বেশিরভাগের মানেই জানেন না গ্রাহকরা। সার্বিক বিষয়ে গাইবান্ধা নেসকো-১ ও নেসকো-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলীসহ উর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে মোবাইল ফোনে বারবার কথা বলার চেষ্টা করা হলেও তাদের  বক্তব্য জানা যায়নি। 

এ ব্যাপারে গাইবান্ধা ডিজিটাল প্রিপেইড মিটার প্রতিরোধ কমিটির আহবায়ক গোলাম রব্বানী মুসা বলেন, গ্রাহকদের সঙ্গে চর খামখেয়ালি আচরণ করছে নেসকো। গ্রাহকদের অভিযোগ আমলে নিয়ে বিদ্যুৎ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের অবস্থান স্পষ্ট করার আহবান জানান তিনি।



আরও খবর



সুন্দরবনে থামছে না অবৈধ মাছ শিকার

প্রকাশিত:মঙ্গলবার ২৮ অক্টোবর ২০২৫ | হালনাগাদ:রবিবার ০৯ নভেম্বর ২০২৫ | ১০৩জন দেখেছেন

Image

স্ট্যাফ রিপোর্টার :


ভারতীয় (কীটনাশক) বিষেই শেষ হতে চলেছে সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতি। বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা ম্যানগ্রোভ এই বনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার থামছেনা। এখন তা ভয়াবহ আকার ধারণ করেছে। শুধু পূব সুন্দরবন বিভাগেই গত চার মাসে বিভিন্ন অভিযানে জেলেদের আটকসহ বিষের বোতল ও বিষ দিয়ে আহরণ করা বিপুল পরিমাণ মাছ জব্দ করা হয়েছে। সুন্দরবন বিভাগ ও পরিবেশবাদীরা বলছেন, এক শ্রেনীর জেলে বিষ দিয়ে মাছ আহরণের ফলে শেষ হয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ। ডলফিনসহ জলজপ্রাণীসহ পাখি ও বন্যপ্রাণী ও ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ চরম হুমকির মুখে পড়েছে।

বাগেরহাটের পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের তথ্যমতে, তালিকাভুক্ত ৫ হাজার ৮০০ জেলে সুন্দরবনের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জের অনুমোদিত নদীখালে পাশ-পারমিট নিয়ে মাছ ও কাঁকড়া আহরণ করে থাকে। সুন্দরবনের নদীখালে বিষ দিয়ে মাছ আহরণ সস্পূর্ন নিষিদ্ধ হলেও দাদনের জালে আটকে থাকা অধিকাংশ জেলেরা লোকালয়ে তাদের মহাজন ও আড়তদারদের সরবরাহকৃত ভারতীয় বিষ খালের পানিতে ছড়িয়ে দিয়ে মাছ আহরণ করে থাকে। নিষিদ্ধ ভারতীয় (কীটনাশক) সহজলভ্য হওযায় ওই বিষ ব্যবহার করে সুন্দরবনে মাছ মারা হচ্ছে।

মহাজন ও দাদনদারদের চাপেই দরিদ্র জেলেরা অনিচ্ছাসত্তে¡ও অধিক মাছ প্রাপ্তির আসায় বিষ দিয়ে মাছ ধরে। এতে করে শেষ হয়ে যাচ্ছে সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ। ডলফিনসহ জলজপ্রাণীসহ পাখি ও বন্যপ্রাণী ও ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছ বেঁচে থাকা দায় হয়ে পড়েছে। গত জুন থেকে সেপ্টেম্বর এই চার মাসে পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের শরণখোলা ও চাঁদপাই রেঞ্জে এলাকায় আড়াই শত অভিযানে ১৩২জন অপরাধীকে আটক করেছে বনরক্ষীরা। জেলেদের কাছ থেকে এসময় জব্দ করা হয়েছে ৪৫ বিষ ভর্তি বোতল, ৪ কেজি বিষ পাউডার (যার প্রায় প্রতিটিতেই মেড ইন ইন্ডিয়া লেখা), ৬৫৭ কেজি বিষযুক্ত মাছ। বিষ দিয়ে ধরা ২২ বস্তা শুটকি মাছ, ৩৭৫ কেজি কাঁকড়া, ২৪২টি ট্রলার ও নৌকা, প্রায় ২০ হাজার ফুট মাছ ধরা জাল।

মোংলার উপজেলার জয়মনি এলাকার রনজিৎ মন্ডল নামে এক জেলে জানান, সুন্দরবন সংলগ্ন গ্রামগুলোর বেশির ভাগ জেলে মহাজনের দাদনের জালে আটকানো। অনেক সময় বাধ্য হয়েই তারা বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে। মহাজনরা বিভিন্ন ডিলারের কাছ থেকে ভারতীয় কিটনাশক এনে দেয়, কিছু খুলনা থেকেও আনা হয়।  নিষেধাজ্ঞার সময় বেকার হয়ে পড়া বা ঋণে জর্জরিত জেলেরা পেটের দায়ে এই পথে নামতে বাধ্য হয়। বিষ দিয়ে ধরা মাছ বা চিংড়ি সরাসরি বাজারে আনা হয় না। বনেই গাছ কেটে মাচা বানিয়ে শুঁটকি তৈরি করা হয়। শুঁটকি শুকাতে সুন্দরীগাছের কাঠ ব্যবহার করা হয়, এতে শুঁটকির রং লালচে হয় এবং দামও বেশি পাওয়া যায়।

শরণখোলা উপজেলার গাবতলা গ্রামের জেলে আ. সাত্তার বলেন, প্রকৃত জেলেরা কখনোই সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ শিকার করে না। কিন্তু কিছু অসাধু জেলে খালগুলোতে বিষ দিয়ে মাছ ধরে। তাদের পেছনে থাকে মহাজনরা। মহাজনরা দাদন দিয়ে জেলেদের ফাঁদে ফেলে এবং নিজেরাই ভারতীয় কিটনাশক সরবরাহ করে। সুন্দরবনে বিষ দিয়ে মাছ ধরলে অনেক সময় আমাদের আটক হয়ে কারাগারে যেতে হয়। তবে, বিষ সরবরাহকারি মহাজনরা থেকে যায় ধরাছোয়ার বাইরে।

সুন্দরবন নিয়ে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠান সেভ দ্যা সুন্দরবন ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান ড. শেখ ফরিদুল ইসলাম জানান, বিষ দিয়ে মাছ শিকার শুধু সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদই নয়, বনের পানি ভয়াবহভাবে দূষিত হয়ে ডলফিনসহ জলজপ্রাণীসহ পাখি ও বন্যপ্রাণী ও ম্যানগ্রোভ প্রজাতির গাছের শ্বাষমূলও চরম হুমকির মুখে পড়েছে। বিষ দিয়ে আহরণ করা মাছ খেয়ে মানুষের স্বাস্থ্যও ঝুঁকির মধ্যে পড়ছে। মূলত মহাজন ও আড়তদারদের চাপে জেলেরা এ কাজ করতে বাধ্য হচ্ছে। সুন্দরবন বিভাগের কাছে আহরিত মাছে বিষ আছে কি না তা সনাক্তের কোন কিট না থাকায় অধিকাংশ সময়ই জেলেরা পার পেয়ে যাচ্ছে। সুন্দরবনের প্রাণপ্রকৃতি রক্ষায় আহরিত মাছে বিষ সনাক্ত করতে বন অধিদপ্তরের কাছে দ্রæত কিট সরবরাহের দাবি জানান এই পরিবেশবিদ।

বাগেরহাট পূর্ব সুন্দরবন বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা (ডিএফও) মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, হরিণ শিকার ও বিষ দিয়ে মাছ ধরা ঠেকাতে আমরা ইতোমধ্যে ড্রোন ব্যবহার শুরু করেছি। এতে হরিণ শিকারীদের কার্যক্রম কমে এসেছে। তবে বিষ দিয়ে মাছ ধরা এখনও নিয়ন্ত্রণে আসেনি। নিষিদ্ধ ভারতীয় কীটনাশকে সয়লাভ হয়ে যাচ্ছে বিশ্ব ঐতিহ্য এলাকা সুন্দরবন। গত চার মাসে আটক জেলেদের কাছ থেকে উদ্ধার হওয়া প্রায় সব বিষের বোতলই ‘মেড ইন ইন্ডিয়া’।

সুন্দরবন সংলগ্ন লোকালয়ে সয়লাভ হয়ে যাওয়া নিষিদ্ধ এই বিষ নিয়ন্ত্রণের দায়িত্ব কৃষি বিভাগের। ইতিমধ্যে আমরা কৃষি বিভাগের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, যাতে সুন্দরবন সংলগ্ন এলাকায় কীটনাশক ব্যবহারে বিধিনিষেধ আরোপ করা যায়। সকলের সম্মিলিত সহযোগিতা পেলে সুন্দরবনকে বিষদস্যুদের হাত থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে। বিষসহ আটক জেলেদের জিজ্ঞাসাবাদে আমরা কিছু তথ্য পেয়েছি। বিষ সরবরাহকানি আড়তদার ও মহাজনদের চিহ্নিত করে ব্যাবস্থা নেয়া গেলেই বিষ দিয়ে মাছ শিকারও হ্রাস পাবে।

বাগেরহাট জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক মো. মোতাহার হোসেন বলেন, বাগেরহাটের সুন্দরবন সংলগ্ন মোংলা ও শরণখোলা উপজেলা এলাকায় কীটনাশক বিক্রি করা ডিলারদের ওপর নজরদারি বাড়ানো হয়েছে। এ দুই উপজেলায় তালিকাভুক্ত প্রায় ৪০ জন কীটনাশক বিক্রেতা রয়েছে। যেসব ডিলার অবৈধ পথে ভারতীয় কীটনাশক আমদানি করছে এবং বাড়িতে মজুত করছে সুন্দবনের জেলে, আড়তদার ও মহাজনদের কাছে বিক্রি করছে তাদের সনাক্ত করে কীটনাশকের লাইসেন্স বাতল করা হবে। এবিষয়ে প্রচারণা চালানো হচ্ছে।


মোঃ কামরুল ইসলাম টিটু 

বাগেরহাট শরনখোলা 


আরও খবর