স্টাফ রিপোর্টার : বাংলাদেশের গণমাধ্যম বর্তমানে নজিরবিহীন স্বাধীনতা ভোগ করছে বলে মন্তব্য করেছেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। তবে তিনি সতর্ক করে বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভুল তথ্যের বিস্তার দেশে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে।
বুধবার (২৯ জানুয়ারি) অর্থনীতি পুনর্গঠন, সম্পদ পাচার রোধ, ভুল তথ্য মোকাবিলা এবং গুরুত্বপূর্ণ অর্থনৈতিক সংস্কার বাস্তবায়নে বাংলাদেশের প্রচেষ্টা নিয়ে ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের নেতাদের সঙ্গে এক বৈঠকে তিনি এ কথা বলেন। বৈঠকে ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যালেক্স সোরোস এবং সভাপতি বিনাইফার নওরোজির নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল উপস্থিত ছিলেন।
প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “বাংলাদেশের গণমাধ্যম বর্তমানে যে স্বাধীনতা ভোগ করছে, তা অতীতের তুলনায় নজিরবিহীন। তবে, ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ভুল তথ্যের ছড়াছড়ি রয়েছে, যা জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টি করছে এবং সঠিক তথ্য প্রবাহের ক্ষেত্রে বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে।”
তিনি আরও বলেন, “গণতন্ত্র ও উন্নয়নের স্বার্থে সঠিক তথ্য প্রবাহ নিশ্চিত করতে হবে।”
বৈঠকে অর্থনীতি পুনর্গঠনের প্রসঙ্গে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, “অন্তর্বর্তী সরকার উত্তরাধিকারসূত্রে একটি বিধ্বস্ত ও সংকটাপন্ন অর্থনীতি পেয়েছে। পুনর্গঠনের জন্য আমাদের বহুমুখী উদ্যোগ নিতে হবে।”
তিনি জানান, শেখ হাসিনার ১৬ বছরের শাসনামলে পাচার হওয়া প্রায় ২৩৪ বিলিয়ন ডলার দেশে ফিরিয়ে আনার প্রচেষ্টা চলছে এবং এ বিষয়ে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা চাওয়া হয়েছে।
জুলাইয়ের ছাত্র নেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থান প্রসঙ্গে তিনি বলেন, “এটি বাংলাদেশের জন্য একটি নতুন দিগন্ত উন্মোচনের সুযোগ এনে দিয়েছে। এই পরিবর্তনকে সুসংহত করতে আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে।”
তিনি ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের প্রতি আহ্বান জানান, তারা যেন আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের কাছে বাংলাদেশের এই গণতান্ত্রিক আন্দোলনের কথা তুলে ধরে।
ড. ইউনূস বলেন, “দাভোস সফরে গিয়ে আমি দেখেছি, আন্তর্জাতিক মহলে জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থান সম্পর্কে যথেষ্ট ধারণা নেই। বরং, বিভিন্ন অপপ্রচার চালানো হচ্ছে, যা আমাদের অর্জনকে দুর্বল করতে পারে।”
ওপেন সোসাইটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান অ্যালেক্স সোরোস বলেন, “আমরা বাংলাদেশ সরকারের প্রচেষ্টার প্রতি সমর্থন জানাই এবং বিভিন্ন ক্ষেত্রে সহযোগিতার উপায় খুঁজব।”
বাংলাদেশের এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন প্রসঙ্গে ফাউন্ডেশন তাদের সহায়তার আগ্রহ প্রকাশ করলে, প্রধান উপদেষ্টা তা স্বাগত জানান। তিনি বলেন, “দেশের অর্থনৈতিক পুনর্গঠনে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।”
প্রধান উপদেষ্টা আরও বলেন, “গণমাধ্যমের স্বাধীনতা বজায় রাখার পাশাপাশি ভুল তথ্যের প্রসার রোধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সত্য ও তথ্যভিত্তিক সংবাদ পরিবেশন নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।”