Logo
আজঃ বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪
শিরোনাম
২০২৫ সালে মুদ্রানীতির রাশ ছাড়বে চীন দিল্লির শাসকগোষ্ঠী এক রক্তপিপাসু লেডি ফেরাউনকে সমর্থন দিচ্ছে; রুহুল কবির রিজভী খুবই সুরক্ষিত উপায়ে দামেস্ক থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়,আসাদকে আগরতলামুখী লংমার্চকে অভ্যর্থনা জানাতে সড়কে বিএনপির নেতাকর্মীরা অস্ত্র মামলায় ১৭ বছরের সাজাপ্রাপ্ত দীর্ঘদিন পলাতক আসামীকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-১০ সেনাদের ধর্ষণে কারাগারেই জন্ম নিয়েছে অসংখ্য শিশু শেখ হাসিনা ও শেখ রেহানার ব্যাংক হিসাব তলব ঢাকার কেরাণীগঞ্জে ১৫ লক্ষ টাকা মূল্যমানের ৪৮৯ বোতল ফেনসিডিলসহ আটক দুই মাদক ব্যবসায়ী সংস্কারের জন্য ৩-৪ মাসের বেশি সময়ের প্রয়োজন দেখে না বিএনপি ভারতীয় দূতাবাসে স্মারকলিপি দিল বিএনপির ৩ সংগঠন

পাঁচ দেশ বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানালেন

প্রকাশিত:বৃহস্পতিবার ১৬ মে ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ২৯৬জন দেখেছেন

Image

পাঁচ দেশ বিবৃতিতে রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানালেন

বিডি ডিজিটাল ডেস্ক:


যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, নরওয়ে, সুইডেন ও সুইজারল্যান্ডের প্রতিনিধিরা আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা বাড়ানোর আহ্বান জানিয়েছেন।

এক যৌথ বিবৃতিতে তারা বলেন, গত বছর আন্তর্জাতিক সহায়তা কমেছে, এই ধারা অব্যাহত থাকলে রোহিঙ্গাদের জীবনে বিপর্যয় নেমে আসবে।

সম্প্রতি রোহিঙ্গা ক্যাম্প পরিদর্শনের পর গতকাল তারা এক যৌথ বিবৃতি দেন। সেখানে তারা আন্তর্জাতিক অভিবাসী সংস্থা আইওএম-এর চলতি বছরের জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানকে সমর্থনের আহ্বান জানান। তারা মনে করেন, সবাই এগিয়ে না এলে রোহিঙ্গা শরণার্থীদের খাদ্য, বাসস্থান ও সুরক্ষার সংকট তৈরি হবে।


জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানের হিসাব অনুযায়ী, ২০২৩ সালে চাহিদার তুলনায় ৩০১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার কম অর্থ সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আর এই তহবিল কমার কারণে রোহিঙ্গাদের খাদ্য, রেশন কমানো হয়েছে, যা তাদের খাদ্য নিরাপত্তা ঝুঁকির মুখে ফেলেছে।

পাঁচটি দেশের প্রতিনিধি দল ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থীকে আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশের প্রশংসা করে বলেন, ‘আমরা রোহিঙ্গা এবং তাদের আশ্রয়দাতাদের সুরক্ষা এবং সমর্থনের আহ্বান জানানো জরুরি মনে করছি।


আমরা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শনের সময় দেখেছি, তাদের মানবিক সম্পদ কমে যাচ্ছে। এবং আগুন ও সামনে বর্ষাকালে খারাপ আবহাওয়ার কারণে কমপক্ষে পাঁচ লাখ রোহিঙ্গা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হবেন।’


এভাবে সহায়তা কমতে থাকলে কমপক্ষে দেড় লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী খাদ্য, নিরাপদ পানীয় জল, বাসস্থান, সুরক্ষা এবং স্বাস্থ্যসেবাসহ প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলো পাবে না। জ্বালানি তেল ও গ্যাস (এলপিজি)-র অভাবে এক লাখ পরিবার জ্বালানির জন্য কাঠের ওপর নির্ভরশীল হবে।

তাদের মাসে ১৪ হাজার টন জ্বালানি কাঠ সংগ্রহ করতে হবে। ফলে বন উজাড় হবে এবং পরিবেশের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে।

বিবৃতিতে তারা আরো বলেন, ‘আমরা এই পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের জন্য অবশ্যই কাজ করতে পারি এবং করতে হবে। বাংলাদেশ সরকারের নেতৃত্বে ১০ লাখ রোহিঙ্গা শরণার্থী এবং সংলগ্ন এলাকার তিন লাখ ৪৬ হাজার বাংলাদেশিকে তাদের জীবন রক্ষায় সহায়তা অব্যাহত আছে।


কিন্তু সহায়তার ওপর নির্ভরশীলতা কমাতে তাদের আত্মনির্ভরশীলতা, জীবিকার সুযোগ তৈরি করা জরুরি।’

রোহিঙ্গাদের জন্য আরো মানবিক ও টেকসই সহায়তা অব্যাহত রাখতে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়কে ২০২৪ সালের জয়েন্ট রেসপন্স পরিকল্পনাকে সমর্থন জানাতে হবে। এই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য হলো রোহিঙ্গা শরণার্থীসহ ১.৩৫ মিলিয়ন (সাড়ে ১৩ লাখ) মানুষের জন্য ৮৫২.৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, প্রতি জনের জন্য ৬৩০ ডলার সংগ্রহ করা।

তারা বলেন, ‘আমরা বাংলাদেশ এবং রোহিঙ্গা শরণার্থীদের প্রতি আমাদের সমর্থন পুনর্ব্যক্ত করছি। এই মানবিক কার্যক্রমে যারা সামনের সারিতে আছেন, তাদের প্রতিও আমাদের সমর্থন অব্যাহত আছে। আমরা অন্যান্য রাষ্ট্র ও সরকারকেও মানবিক পরিকল্পনা বাস্তবায়নে অংশগ্রহণের আহ্বান জানাই।’

তাদের কথা, রোহিঙ্গাদের সুরক্ষা এবং জীবন বাঁচাতে এই জরুরি সহায়তা খুবই প্রয়োজন। রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশে আগমনের সাত বছর হয়েছে। সংকটময় এই সময়ে যখন তাদের রক্ষায় আরো সহায়তা প্রয়োজন, তখন নাটকীয়ভাবে আর্থিক সহায়তা কমে গেছে। তাই সহায়তা অব্যাহত রাখার জন্য আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের প্রতি আহ্বান জানান তারা।

বিবৃতিতে জানানো হয় এখন পর্যন্ত মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ৭.৬ মিলিয়ন ডলার অনুদানের ঘোষণা দিয়েছে, জাপান দিয়েছে ২.৬ মিলিয়ন ডলার। নরওয়েও ৬.৫ মিলিয়ন ক্রোনার দেয়ার প্রতিশ্রতি দিয়েছে। সুইডেন এবং সুইজারল্যান্ড জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যানকে সমর্থন জানিয়েছে।

এদিকে বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সংক্রান্ত সংসদীয় স্থায়ী কমিটির সদস্যরাও রোহিঙ্গা শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেছেন।তারা গত রোববার (১২ মে) দুপুরে উখিয়া কুতুপালং শরণার্থী ক্যাম্প পরিদর্শন করেন।

সংসদীয় কমিটির সদস্যরা জাতিসংঘের সংস্থা ডাব্লিউএফপি, আইএমওসহ বিভিন্ন সংস্থার কার্যক্রম দেখেন এবং ক্যাম্প-৫-এর সিআইসি অফিসের কনফারেন্স রুমে রোহিঙ্গা প্রতিনিধিদের সঙ্গে মতবিনিময় করেন। পরে তারা ঘুমধুমের নতুন ট্রানজিট ক্যাম্প, ১৮ নম্বর ক্যাম্পে রোহিঙ্গা কালচারাল মেমোরি সেন্টার, কুতুপালং সিআইসি অফিস পরিদর্শন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় সম্পর্কিত স্থায়ী কমিটির সভাপতি ড. এ কে আব্দুল মোমেন, কমিটির সদস্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী হাছান মাহমুদ, নাহিম রাজ্জাক, নিজাম উদ্দিন জলিল, নুরুল ইসলাম নাহিদ, হাবিবুর রহমান ও সাইমুম সরওয়ার কমল, জারা জাবিন মাহমুদ।

কুতুপালং ক্যাম্পের আমীর হোসেন বলেন, ‘আগে রেশনের জন্য আমাদের মাসে এক হাজার ২০০ টাকা দিতো। কয়েক মাস আগে কমিয়ে ৮৫০ টাকা দেয়া শুরু করে। এ মাসে আবার এক হাজার টাকা দিয়েছে। এই টাকা দিয়ে আমরা কম দামে রেশন শপ থেকে খাদ্য কিনি। কিন্তু তাতে আমাদের হয় না। আমার পরিবারে ছয়জন সদস্য। অনেক কষ্ট হয়।’

‘রান্নার জন্য যে এলপি গ্যাস দেয় তাতে ১৫ দিনের বেশি চলে না। বাকি ১৫ দিন আমাদের ম্যানেজ করতে হয়। চিকিৎসা, ওষুধ এগুলোও পর্যাপ্ত নয়,’ বলেন তিনি।তার কথা, ‘আমাদের বাইরে যাওয়া বা কাজ করার কোনো সুযোগ নাই। যারা ভিতরে এনজিওর সঙ্গে কাজ করেন তাদের কিছু বাড়তি আয় আছে।’

সাবেক রাষ্ট্রদূত ও মিয়ানমারে বাংলাদেশের সাবেক সামরিক অ্যাটাশে মেজর জেনারেল (অব.) শহীদুল হক বলেন, ‘ইউক্রেন যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর পশ্চিমা দাতাদের নজর এখন ইউরোপের শরণার্থীদের দিকে। এরপর এখন গাজা পরিস্থিতির কারণে সেখানেও নজর দিতে হচ্ছে দাতাদের। ফলে রোহিঙ্গাদের ওপর নজর কমছে। সহায়তা কমছে।’

‘এই পাঁচ দেশের আহ্বানের কারণে পরিস্থিতির খুব বেশি উন্নতি হবে বলে আমার মনে হয় না। আমাদের আরো তৎপর হতে হবে। বাংলাদেশ যদি রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে কূটনৈতিক তৎপরতা না বাড়ায় তাহলে এটা বাংলাদেশের জন্যই আরো সমস্যা ডেকে আনবে,’ বলেন তিনি।

তার কথা, ‘ওখানে খাদ্য সংকট হলে নানা সমস্যা তৈরি হবে। ক্যাম্পে অপরাধ বেড়ে যাবে। তারা ক্যাম্পের বাইরে গিয়ে তাদের চাহিদা মেটানোর চেষ্টা করবে। তখন নতুন সংকট তৈরি হতে পারে। চাপটা পড়বে বাংলাদেশের ওপরে।’

তিনি বলেন, ‘আমি জানি না ডোনাল্ড লুর এই সফরে রোহিঙ্গা ইস্যু কতটা গুরুত্ব পেয়েছে। তবে বাংলাদেশের এটা শীর্ষে রাখা উচিত।’

আর সংসদীয় কমিটির সদস্য নুরুল ইসলাম নাহিদ বলেন, ‘তাদের প্রতিমাসে ১০ ডলার করে সহায়তা দেয়ার কথা। এটা আরো বাড়ানো প্রয়োজন। তাদের পাঁচজনের পরিবার হিসাব করে এই সহায়তা দেয়া হচ্ছে। আসলে এই অর্থে তাদের ঠিক মতো চলে না। তাদের পুষ্টির হিসাব করে এটা দেয়া হয়।’ তার আশা, সহায়তা আরো বাড়বে।

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে প্রতিদিনই নতুন শিশুর জন্ম হচ্ছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘সহায়তা না বাড়লে যে সমস্ত লোকজন সেখানে আছেন, তারা কষ্টের মুখে পড়বেন।’ তিনি এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ‘রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়াই হচ্ছে আসল সমাধান। আমরা সেটা নিয়েও কাজ করছি। আমরা বিভিন্ন দেশের প্রতিনিধিদের সে কথা বলেছি।’

(ডয়চে ভেলে বাংলা সংস্করণের পক্ষ থেকে প্রতিবেদনটি তৈরি করা)


আরও খবর



সংস্কারের জন্য ৩-৪ মাসের বেশি সময়ের প্রয়োজন দেখে না বিএনপি

প্রকাশিত:সোমবার ০৯ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৫৫জন দেখেছেন

Image

নিজস্ব প্রতিনিধি : সংস্কারের জন্য তিন বা চার মাসের বেশি সময়ের প্রয়োজন দেখে না বিএনপি। দলের গঠিত সংবিধান সংস্কার কমিটির সদস্যরা মনে করেন- নতুন করে বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা করা সময়ের অপচয়। সোমবার (৯ ডিসেম্বর) বিএনপির গুলশান অফিসে সংবাদ সম্মেলনে তারা একথা বলেন।

এ সময় নেতারা বলেন- যাদের নেতৃত্বে নির্বাচনী প্রক্রিয়া কলঙ্কিত হয়েছে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্হা নেয়া এবং অভিযুক্তদের আগামীতে কোন নির্বাচনী কাজে আর যুক্ত না করার সুপারিশ করা হয়েছে। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা না করে বরং হালনাগাদের পরামর্শ তাদের।

এ সময় সংবিধানে আরপিও সংশোধন, সীমানা নির্ধারণ, নির্বাচনী কর্মকর্তাদের ভূমিকা, এনআইডির ক্ষমতা ইসিতে অপর্ণসহ নির্বাচন সংক্রান্ত ১৭টি সুপারিশ তুলে ধরেন তারা। যারা দীর্ঘদিন ভোট দিতে পারেনি তাদেরকে একটি সুষ্ঠু পরিবেশের মাধ্যমে কেন্দ্রে নিতে চায় বলেও জানান বিএনপি নেতারা।


আরও খবর



জাতীয় সংলাপের ঐক্যের মাধ্যমে ভারতকে বার্তা দিল অন্তর্বর্তী সরকার

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৬১জন দেখেছেন

Image

একটি বিশেষ পরিস্থিতি বা উত্তেজনার মধ্যে দল-মতনির্বিশেষে সবাইকে এক জায়গায় আনার উদ্যোগ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পতিত আওয়ামী লীগ ও তাদের মিত্ররা ছাড়া দেশের সব রাজনৈতিক দল, সংগঠন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে বৈঠক করেন তিনি। সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, গত মঙ্গলবার থেকে বৃহস্পতিবার পর্যন্ত তিন পর্বের বৈঠকগুলো জাতীয় ঐক্য প্রচেষ্টার নিরিখে কার্যকর ও সফল হয়েছে। এর মাধ্যমে এই বার্তা প্রতিষ্ঠা পেয়েছে যে মত ও পথের ভিন্নতা সত্ত্বেও দেশের স্বাধীন অস্তিত্ব ও মর্যাদার প্রশ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ।

একজন হিন্দুধর্মীয় নেতাকে গ্রেপ্তারের পর ভারতের হিন্দুত্ববাদী কিছু সংগঠন ও গোষ্ঠী সংখ্যালঘু নির্যাতনের অভিযোগ তুলে আগরতলায় বাংলাদেশ সহকারী হাইকমিশনে হামলা চালায়। এ নিয়ে একধরনের উত্তেজনাকর পরিস্থিতিতে ড. মুহাম্মদ ইউনূস রাজনীতিকসহ ধর্মীয় নেতাদের সঙ্গে ধারাবাহিক বৈঠক করেন।

সরকার ও রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, হিন্দু সম্প্রদায়কে ঘিরে যে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে, এর পেছনে পতিত আওয়ামী লীগ সরকারের প্রধান শেখ হাসিনার ভূমিকা রয়েছে। তাঁর সঙ্গে যুক্ত হয়ে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ বিভিন্নভাবে অস্থিরতা তৈরি করছে।

এ পরিস্থিতিতে সংলাপের আয়োজন করে অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ এবং তাদের সমর্থক ভারতীয় কর্তৃপক্ষকে দুটি বার্তা দিতে চেয়েছে। একটি হলো দেশের সার্বভৌমত্ব ও মর্যাদার প্রশ্নে সরকার আপসহীন। দ্বিতীয়টি হলো, ফ্যাসিবাদ হটাতে গণ–অভ্যুত্থানে অংশ নেওয়া সব পক্ষ তাদের প্রতিহত করতে এখনো এককাট্টা। এই ঐক্য ধরে রেখে জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের চেতনায় আগামী দিনে স্বৈরাচারী শাসনমুক্ত একটি নতুন বাংলাদেশ গড়ার পথে এগোতে চায় রাজনৈতিক দলগুলো।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা মনে করছেন, রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে গ্রেপ্তার, তাঁর জামিন আবেদন নাকচকে কেন্দ্র করে আইনজীবী হত্যা, ভারতীয় গণমাধ্যমে উসকানিমূলক নানা অপপ্রচার, এর জের ধরে ভারতের আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশনে হামলা এবং জাতীয় পতাকার অবমাননা, বাংলাদেশে জাতিসংঘ শান্তিরক্ষী পাঠাতে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের আরজিসহ বেশ কিছু ঘটনা উত্তেজনাকর পরিস্থিতির সৃষ্টি করে।

এই সংলাপ সম্পর্কে বিএনপি নেতা আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী প্রথম আলোকে বলেন, ধর্মকে ব্যবহার করে দেশে বিভক্তি সৃষ্টির পেছনে বাইরের শক্তির প্রভাব, দেশের অভ্যন্তরীণ স্থিতিশীলতা প্রশ্নবিদ্ধ করার মতো ঘটনা এভাবে অতীতে কখনো ঘটেনি। এ ধরনের পরিস্থিতিতে দেশের স্বাধীন অস্তিত্বের প্রশ্নে জাতীয় ঐক্য থাকতে হয়, এ বৈঠকে সেটিই হয়েছে। সংলাপে জাতীয় ঐক্যের একটা প্রকাশ ঘটেছে।

প্রধান উপদেষ্টার দপ্তরের দায়িত্বশীল একটি সূত্র জানিয়েছে, শিগগিরই জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, ছাত্র ফেডারেশনসহ অভ্যুত্থান-সংশ্লিষ্ট ছাত্রসংগঠনগুলোর সঙ্গে বৈঠক হবে। এর মধ্য দিয়ে এই সংলাপ শেষ হবে।

বুধবারের সংলাপে অংশ নিয়েছিলেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান নেতা জোনায়েদ সাকি। সেদিনের রাজনৈতিক সম্মিলনের নির্যাস সম্পর্কে তিনি গতকাল প্রথম আলোকে বলেন, ‘বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব এবং জাতীয় স্বার্থের প্রশ্নে আমরা ঐক্যবদ্ধ—এটি ছিল মূল কথা। বিশেষ করে ফ্যাসিবাদবিরোধী গণ-অভ্যুত্থানে অংশগ্রহণকারী আমরা সব শক্তি আমাদের গর্বিত অর্জনকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় রক্ষা করতে চাই, এই বৈঠক সেটিরই একটি প্রকাশ।’

বৈঠকে অংশগ্রহণকারী অনেকের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, প্রতিবেশী দেশের সঙ্গে উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় রাজনৈতিক ও ধর্মীয় নেতারা সরকারের পাশে থাকার অঙ্গীকার করেছেন। সেই সঙ্গে তাঁরা সরকারকে বেশ কিছু পরামর্শও দিয়েছেন। ভারতীয় গণমাধ্যমের অপপ্রচার এবং অপতথ্যের বিরুদ্ধে সরকারের দিক থেকে শক্ত পদক্ষেপ গ্রহণের পরামর্শ দিয়েছেন প্রায় সবাই।

এ ছাড়া জাতীয় ঐক্যের লক্ষ্যে ৬৪ জেলায় সম্প্রীতি সমাবেশ করা, জাতীয় ঐক্যের প্রতীকী সংহতি হিসেবে সর্বস্তরের নাগরিকদের নিয়ে সম্মিলিত কর্মসূচি করা এবং সারা দেশে একযোগে একই সময়ে যাঁর যাঁর অবস্থান থেকে জাতীয় পতাকা হাতে দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালনেরও প্রস্তাব দেন আমার বাংলাদেশ পার্টির (এবি) সদস্যসচিব মুজিবুর রহমানসহ অনেকে। শিগগিরই সম্মিলিত কোনো কর্মসূচির ঘোষণা আসতে পারে।

এ বিষয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল প্রথম আলোকে বলেন, ভারতের যে মিথ্যা প্রচারণা, বাংলাদেশবিরোধী কর্মকাণ্ড, এর বিরুদ্ধে আওয়ামী লীগ ও তাদের সহযোগীরা ছাড়া জাতি যে ঐক্যবদ্ধ আছে, এই বার্তা দেশে এবং বহির্বিশ্বে পৌঁছে দেওয়া প্রয়োজন ছিল। সে বার্তাটি গেছে। একই সঙ্গে এই সংলাপে বিভিন্ন বিষয়ে যে প্রস্তাব এসেছে, যেমন সবাই মিলে একটি সমাবেশ করা, পলিটিক্যাল কাউন্সিল করা, জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল করা—এগুলো বিবেচনার অবকাশ সৃষ্টি হয়েছে।

আসিফ নজরুল বলেন, ‘ভারতকে বুঝতে হবে, বাংলাদেশের মানুষ আর নতজানু নীতি মেনে নেবে না, আমরা সম–অধিকার ও সমমর্যাদার ভিত্তিতে বন্ধুত্ব চাই।


আরও খবর



রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলে ৮৭ শতাংশ শিক্ষার্থীই পোষ্য কোটায় ভর্তি

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৬৭জন দেখেছেন

Image

রাবি প্রতিনিধি : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) স্নাতক প্রথম বর্ষের ভর্তিতে পোষ্য কোটা বাতিলের দাবিতে চলছে নানা আলোচনা-সমালোচনা। শিক্ষার্থীদের দাবির প্রেক্ষিতে পরবর্তীতে পোষ্য কোটার যৌক্তিকতা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনও একটি ‘রিভিউ কমিটি’ গঠন করেছেন। তবে স্নাতক পর্যায়ে পোষ্য কোটা ভর্তির তুলনায় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভূক্ত রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল অ্যান্ড কলেজে পোষ্য কোটায় ভর্তির হার আরও বেশি। স্নাতক পর্যায়ে ভর্তি প্রক্রিয়ায় কোটা শতকরা ৪ শতাংশ থাকলেও স্কুল পর্যায়ে ভর্তিতে এই কোটার হার ৮৭ শতাংশ।

বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ও স্কুল কর্তৃপক্ষ বলছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এখানে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য। ক্যান্টনমেন্ট স্কুলগুলোতে যেমন সেখানকার নিযুক্ত কর্মকর্তাদের সন্তানরাই লেখাপড়া করতে পারেন। সেই একই উদ্দেশ্যে এটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছিল। তবুও বাইরের কিছু শিক্ষার্থী ভর্তির সুযোগ পান। যদিও সেটা খুবই নগণ্য। তবে বর্তমান ছাত্রনেতারা বলছেন পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে পোষ্য কোটা রাখার কোনো যৌক্তিকতা নেই।

গত ২০ নভেম্বর রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের ২০২৫ শিক্ষাবর্ষের প্রথম শ্রেণির ভর্তি বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়। সেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, মোট ১২০টি আসন সংখ্যার মধ্যে অভ্যন্তরীণ ১০৫ এবং বহিরাগত ১৫ টি। বিজ্ঞপ্তিতে অভ্যন্তরীণ হিসেবে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক/কর্মচারী/সহায়ক/সাধারণ কর্মচারী/নিয়মিত মাস্টাররোল কর্মচারী ও ডাইনিং কর্মচারীর সন্তানদের জন্য বরাদ্দ রাখা হয়। অন্যদিকে নিয়মিত শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী নয়, তাদেরকে প্রতিপাল্য বহিরাগত হিসেবে বিবেচনা করা হয়েছে।

পোষ্য কোটার যৌক্তিকতা নেই জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফিশারীজ বিভাগের অধ্যাপক দেলোয়ার হোসাইন বলেন, গত জুলাই-আগস্টে আমাদের হাজারো শহিদের রক্তের বিনিময়ে যে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে, এই শহিদদের একটাই দাবি ছিল কোটা প্রথা নিপাত যাক। আমি একজন বিবেকবান মানুষ হিসেবে এই কোটা আর দেখতে চাই না। সবাই ক্লাসে একই মেধাতে ক্লাস করবে। দুইটা ভিন্ন মেধার শিক্ষার্থী একই ক্লাস বুঝতে পারেন না। যে শিক্ষার্থী কোটায় ভর্তি হয়, তার সঙ্গে মেধায় ভর্তি শিক্ষার্থীর জ্ঞানের পার্থক্য থাকে। ওই প্রেক্ষাপট থেকে বর্তমানে কোটা রাখার কোনো যৌক্তিকতা থাকতে পারে না।

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক সুলতান আহমেদ রাহী বলেন, আমি মনে করি অবশ্যই এটা বৈষম্য। ছাত্র জনতার জুলাই বিপ্লবের পরে সব জায়গায় মেধার ভিত্তিতে সুযোগ পাবে এটাই আমরা দেখতে চাই। একজন দিন মজুরের ছেলে যেভাবে মেধার ভিত্তিতে চান্স পায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মচারীর সন্তানও যেন সেভাবেই সুযোগ-সুবিধাটা পায় এটাই আমাদের চাওয়া।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় স্কুলের অধ্যক্ষ আমিনুল ইসলাম বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুলটি প্রতিষ্ঠা করা হয়েছে এখানে শিক্ষক কর্মকর্তা কর্মচারীদের সন্তানদের পড়াশোনার জন্য। ১৯৬৬ সাল থেকে পোষ্য কোটার জন্য আলাদা আলাদা বরাদ্দ রাখার বিষয়ে নীতিমালা রয়েছে। সেই অনুযায়ী পোষ্য কোটা নিয়েই ভর্তি চলছে।

জানতে চাইলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ফরিদ উদ্দিন খান বলেন, এই স্কুলটি প্রতিষ্ঠার উদ্দেশ্য ছিল এখানকার যারা শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারী আছেন, তাদের সন্তানরা পড়ালেখা করবে।


আরও খবর



৩৩০ কোটি টাকা ব্যয়ে গেম ও অ্যাপ কাজেই এল না

প্রকাশিত:শনিবার ০৭ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৭১জন দেখেছেন

Image

অনলাইন ডেস্ক: আলাদা তিনটি কর্মসূচি নেয়ার পর আবার ৩৩০ কোটি টাকার মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশন উন্নয়ন এবং দক্ষতা বৃদ্ধিতে প্রকল্প নিয়েছিল ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের আমলের তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি (আইসিটি) বিভাগ। তবে ওই প্রকল্পের আওতায় তৈরি বেশির ভাগ গেম ও অ্যাপ কোনো কাজে আসছে না।

সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, ঘুরেফিরে নিজেদের লোকদের কাজ দিতে এসব প্রকল্প নেয়া হয়েছিল। এ প্রকল্পের মোট অর্থের ১৭ শতাংশের বেশি শেখ পরিবারের নামে সিনেমা ও গেম তৈরিতে ব্যয় হয়েছে। ২০১৬ সালের জুলাইয়ে ‘মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশনের দক্ষতা উন্নয়ন’ শীর্ষক এ প্রকল্প নেয়া হয়। তিন দফায় মেয়াদ বেড়ে এ প্রকল্পে ব্যয় দাঁড়িয়েছে ৩৩০ কোটি টাকা। চলতি ডিসেম্বরে যা শেষ হবে।

প্রকল্প সূত্র জানায়, প্রকল্পটির পিসিআর প্রতিবেদন তৈরি হচ্ছে। প্রকল্পে প্রশিক্ষণ বাবদ ১৩৫ কোটি টাকার বেশি ব্যয় ধরা হয়েছে। অ্যাপ ও গেম তৈরিতে ব্যয় হয় ১৬৪ কোটি টাকা। প্রকল্পের আওতায় দেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে ৩৮টি গেমিং ও অ্যাপস ল্যাব করা হয়েছে।

কাছের লোকদের জন্যই প্রকল্প

ডিজিকন টেকনোলজিসের সঙ্গে যৌথভাবে মাল্টিমিডিয়া কনটেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশনস লিমিটেড (এমসিসি) সবচেয়ে বেশি কাজ পেয়েছে। প্রকল্পে এই দুই কোম্পানি ৩০ কোটি ৪৪ লাখ টাকার কাজ পায়।

খাত সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের অভিযোগ, সাবেক আইসিটি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকের ঘনিষ্ঠ হওয়ায় এমসিসি অনেক কাজ পেয়েছে। এমসিসিকে পরে এনডিই ইনফ্রাটেক কিনে নেয়।

এমসিসির প্রধান নির্বাহী ও এনডিই ইনফ্রাটেকের পরিচালক মো. আশরাফ খান দাবি করেন, সম্পর্ক নয়, তিনি প্রতিযোগিতা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে কাজ পেয়েছেন। ডিজিকন টেকনোলজিসের প্রধান ওয়াহেদ শরীফ ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে ও আইসিটি উপদেষ্টা সজীব ওয়াজেদ জয়ের বন্ধু বলে প্রচলিত রয়েছে। আইসিটি খাতে তার একচেটিয়া প্রভাব ছিল। সরকার পতনের আগেই তিনি বিদেশে চলে গেলেও প্রতিষ্ঠান সচল রয়েছে।

ওয়াহেদ শরীফ দাবি করেন, নিয়ম মেনেই তার প্রতিষ্ঠান কাজ পেয়েছে। মোবাইল গেম প্রকল্পে বেশি কাজ পাওয়া অন্যান্য প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে- প্রাইম টেক সল্যুশন, ইজি টেকনোলজি ও স্পিনঅফ স্টুডিও।

তথ্যপ্রযুক্তি খাত–সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, নাটোরের স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা মাসরুল আলম (মিলন) আইসিটি বিভাগে কমিশন–বাণিজ্য করতেন। শেষ দিকে এসে তিনি নিজেই কোম্পানি খোলেন। অভিজ্ঞতা না থাকায় তিনি প্রাইমটেক, স্পিনঅফসহ অন্যদের সঙ্গে কাজ করতেন।

অভিযোগ প্রসঙ্গে প্রাইমটেকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মির্জা রাশেদুল আলম বলেন, মাসরুল নিজের অভিজ্ঞতার জন্য তাদের সঙ্গে কাজ করেছেন। প্রায় একই কথা বলেন স্পিনঅফের প্রতিষ্ঠাতা এ এস এম আসাদুজ্জামান। মাসরুলের মোবাইলফোন বন্ধ পাওয়ায় তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।

আবার পলকের ঘনিষ্ঠ মফিজুর রহমান ইজি টেকনোলজির ব্যবস্থাপনা পরিচালক। আইসিটি বিভাগসহ পলকের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম পরিচালনার একচেটিয়া কাজ করত ইজি টেকনোলজির সহযোগী প্রতিষ্ঠান ঢাকা লাইভ। সরকার পতনের পর প্রতিষ্ঠানটি লাপাত্তা হয়ে গেছে।

বিডিজবসের প্রধান নির্বাহী ফাহিম মাশরুর বলেন, কাছের কিছু ব্যক্তির জন্য প্রকল্পটি নেয়া হয়েছিল। এটা অপ্রয়োজনীয় প্রকল্প ছিল।

অ্যাপ ও গেমের অবস্থা

গুগল প্লে স্টোরে এ প্রকল্পের নামে ১৫০টি অ্যাপ পাওয়া যায়। বেশির ভাগ অ্যাপের ডাউনলোডের পরিমাণ ১টি, ১০টি, ৫০টি ও ১০০টি করে। সর্বোচ্চ ৫০ হাজার করে ডাউনলোড হয়েছে ডিজিটাল শিশু শিক্ষা ও মুজিব ১০০ অ্যাপ।

করোনা মহামারিকালে ২০২০ সালে এ প্রকল্পে প্রায় ৪০ লাখ টাকা ব্যয়ে ‘লাইভ করোনা টেস্ট’ নামে প্ল্যাটফর্ম তৈরি করে, যার কোনো অস্তিত্বই খুঁজে পাওয়া যায়নি।

শেখ পরিবারকে নিয়ে ৫০ কোটি ব্যয়

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এবং তার ছেলে-মেয়েকে নিয়ে বানানো বিভিন্ন অ্যাপ ও গেমের পেছনে প্রকল্পের মোট বরাদ্দের সাড়ে ১৭ শতাংশ ব্যয় করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের ২৩টি উক্তি নিয়ে থ্রি–ডি হলোগ্রাম তৈরি হয়েছে এ প্রকল্পের টাকায়। এতে ব্যয় হয় প্রায় ২১ কোটি টাকা।

প্রকল্পের প্রকিউরমেন্টের ৬৪টি কাজের তালিকা পাওয়া যায়। এর মধ্যে ৯টি বঙ্গবন্ধু, শেখ হাসিনা ও শেখ রাসেলকে নিয়ে বানানো অ্যানিমেশন ও গেম তৈরি। এতে চ্যাটবট, অভিধান, অ্যাপ ও অ্যানিমেশন সিনেমা রয়েছে।

২০২২ সালে শেখ হাসিনার ৭৬তম জন্মদিন উপলক্ষে ‘হাসিনা অ্যান্ড ফ্রেন্ডস’ নামে একটি গেমিং প্ল্যাটফর্মের উদ্বোধন করা হয়। সব মিলিয়ে এসব কাজে ৫০ কোটি টাকার বেশি ব্যয় করা হয়।

প্রকল্পে আট বছরে যত পরিচালক

মোবাইল গেম ও অ্যাপ্লিকেশন প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে ১১ জন কাজ করেছেন। তাদের মধ্যে তিনজন এক থেকে দুই বছরের বেশি সময় কাজ করেছেন। ৫ জন ১ মাস থেকে সর্বোচ্চ ৯ মাস কাজ করেছেন। বাকি তিনজন এক মাসও কাজ করতে পারেননি। একজন ১৩ দিনও কাজ করেছেন।

আইসিটি বিভাগের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, এ প্রকল্পে প্রচুর তদবির ও সুপারিশ আসত। তাই কেউ থাকতে পারতেন না।

প্রকল্পের পরিচালক হিসেবে কাজ করা এক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, তাকে সরানোর জন্য সাবেক প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ জনপ্রশাসনে ডিও লেটার দিয়েছিলেন।

এ প্রকল্প প্রসঙ্গে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তথ্যপ্রযুক্তি ইনস্টিটিউটের অধ্যাপক বি এম মইনুল হোসেন বলেন, এ প্রকল্পের ধারণা ও উদ্দেশ্য ভালো ছিল। কিন্তু বাস্তবায়নে সমস্যা ছিল। বাংলাদেশকে তুলে ধরে, বিশ্বমানের এমন অন্তত একটি গেম হলেও প্রকল্পটিকে সফল বলা যেত। কিন্তু তা হয়নি।


আরও খবর



স্বর্ণসহ অভিনেত্রীর আটক নিয়ে ধোঁয়াশা

প্রকাশিত:রবিবার ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ | হালনাগাদ:বুধবার ১১ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৬৬জন দেখেছেন

Image

নিজেস্ব প্রতিনিধি: বিনোদন জগতের ছোটপর্দার অভিনেত্রী অনামিকা জুথী দীর্ঘদিন ধরেই অভিনয় থেকে দূরে আছেন। সম্প্রতি চট্টগ্রামের শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে অভিনেত্রীসহ দুই যাত্রীর কাছ থেকে ৭৩৩ গ্রাম স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়েছে, যার বাজারমূল্য প্রায় ৬৯ লাখ টাকা। শনিবার সকাল ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে তাদের আটক করেন এনএসআই চট্টগ্রাম বিমানবন্দর টিম ও শুল্ক গোয়েন্দারা।

আটক দুই যাত্রী হলেন— ঢাকার মিরপুরের নাট্যাভিনেত্রী অনামিকা জুথী ও চট্টগ্রামের রাউজানের মোহাম্মদ রায়হান ইকবাল। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল।

দীর্ঘদিন ধরেই বিনোদন জগত থেকে দূরে আছেন এ প্রজন্মের অভিনেত্রী অনামিকা জুথী। বর্তমানে তিনি পরিবার নিয়ে দুবাই থাকছেন। হঠাৎ করেই খবরের শিরোনামে এলেন তিনি। বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমের শিরোনাম ঠিক এমন ‘৬৯ লাখ টাকার স্বর্ণসহ বিমানবন্দরে আটক অভিনেত্রী জুথি’। 

এমন খবরের পর তার সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে অনামিকা জুথী বলেন, আটক করার মতো ঘটনা ঘটেনি। ভুল তথ্য ছড়িয়েছে। তবে কিছু স্বর্ণ আমার সঙ্গে ছিল, তবে সেটার জন্য ট্যাক্স দিতে হয়। অলরেডি আমি ট্যাক্স দিয়েছি। প্রয়োজনীয় পেপারে সাইন হয়ে গেলেই বাসায় ফিরব। যেভাবে নিউজ হয়েছে তা দেখে আমি বিব্রত। পরিচিত সবাই ফোন করছেন। কীভাবে এত বড় ভুল একটি তথ্য ছড়িয়েছে আমার বোধগম্য নয়। এটা আমার জন্য সম্মানহানিকর।

অন্যদিকে শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের জনসংযোগ কর্মকর্তা প্রকৌশলী মোহাম্মদ ইব্রাহীম খলিল গণমাধ্যমকে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে তল্লাশি করলে দুই যাত্রীর কাছ থেকে চুড়ি, চেইন ও হোয়াইট গোল্ডের চেইনসদৃশ নিখাদ স্বর্ণ উদ্ধার করা হয়। যার বাজারমূল্য ৬৮ লাখ ৯৬ হাজার টাকা। অনামিকা জুথী তার দুই হাতে চুড়িগুলো স্কচটেপ দিয়ে আটকে এবং চেইনগুলো তাদের গলায় সুকৌশলে লুকিয়ে বহন করছিলেন। এ ছাড়া স্বর্ণালঙ্কারগুলো তারা তাদের হাতব্যাগে বহন করছিলেন।

বিমানবন্দর সূত্র জানায়, দুই যাত্রী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বিজি-১৪৮ ফ্লাইটযোগে (দুবাই-চট্টগ্রাম-ঢাকা) দুবাই থেকে সকাল ৯টা ৩৫ মিনিটে চট্টগ্রাম শাহ আমানত আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে পৌঁছান। তবে তারা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের যাত্রী হওয়ায় অ্যাভিয়েশন রুল অনুযায়ী তাদের একই বিমানযোগে ঢাকা হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের টিমের কাছে হস্তান্তর করা হয়।


আরও খবর