অনলাইন ডেস্ক: ২০২৫ সালের জানুয়ারি মাসে প্রবাসীরা বাংলাদেশে মোট ২১৮ কোটি ৫২ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন, যা দেশে প্রায় ২৬ হাজার ৬৫৯ কোটি ৪৪ লাখ টাকার সমান। এই হিসেবে, প্রতিদিন গড়ে দেশে ৭ কোটি ৫ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের হালনাগাদ প্রতিবেদন অনুযায়ী, গত জানুয়ারি মাসে রেমিট্যান্স প্রবাহে কিছুটা পতন লক্ষ্য করা গেছে। ডিসেম্বরে দেশে ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স আসলেও, জানুয়ারিতে তা কমে ২১৮ কোটি ৫২ লাখ ৩০ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স প্রবাহ ছিল দেশের ইতিহাসে সর্বোচ্চ, যা জানুয়ারির তুলনায় প্রায় ১৭ শতাংশ কম।
প্রতিবেদন অনুযায়ী, জানুয়ারিতে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫১ কোটি ১১ লাখ ৩০ হাজার ডলার, বিশেষায়িত ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১১ কোটি ৬০ লাখ ৪০ হাজার ডলার, বেসরকারি ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ১৫৫ কোটি ১৫ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং বিদেশি খাতের ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৬৪ লাখ ৯০ হাজার ডলার।
এছাড়া, জানুয়ারির ২৬ থেকে ৩১ তারিখ পর্যন্ত প্রবাসীরা দেশে পাঠিয়েছেন ৫০ কোটি ৯২ লাখ ৬০ হাজার ডলার, জানুয়ারির ১৯ থেকে ২৫ তারিখ পর্যন্ত এসেছে ৪৬ কোটি ৯০ লাখ ৯০ হাজার ডলার, এবং জানুয়ারির ৫ থেকে ১১ তারিখ পর্যন্ত রেমিট্যান্স এসেছে ৫০ কোটি ৯৮ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
অন্যদিকে, ২০২৪ সালের পুরো বছরে প্রবাসীরা মোট ২ হাজার ৬৮৮ কোটি ৯১ লাখ মার্কিন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এর মধ্যে জানুয়ারিতে ২১১ কোটি ৩১ লাখ ৫০ হাজার ডলার, ডিসেম্বরে সর্বোচ্চ ২৬৩ কোটি ৮৭ লাখ ৮০ হাজার ডলার পাঠানো হয়েছে।
এছাড়া, চলতি অর্থবছরের প্রথম ৭ মাসে রেমিট্যান্সের প্রবাহ ২৩ দশমিক ৬১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১ হাজার ৫৯৬ কোটি ডলার হয়েছে, যা গত বছরের একই সময়ে ছিল ১ হাজার ২৯১ কোটি ডলার। এর ফলে বৈদেশিক মুদ্রাবাজার কিছুটা স্থিতিশীল হয়েছে এবং রপ্তানিতেও ভালো প্রবৃদ্ধি দেখা যাচ্ছে।
বিশ্লেষকদের মতে, রেমিট্যান্স প্রবাহ বৃদ্ধির মূল কারণ হুন্ডির চাহিদা কমে যাওয়ার পাশাপাশি বৈধ ব্যাংকিং চ্যানেলে অর্থ পাঠানোর প্রবণতা বেড়েছে। সরকারের অর্থ পাচার রোধে কঠোর পদক্ষেপের কারণে অবৈধভাবে অর্থ পাঠানোর সুযোগ কমেছে, যা রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক প্রভাব ফেলছে।
বাংলাদেশের রপ্তানি খাতেও ইতিবাচক প্রবৃদ্ধি লক্ষণীয়। চলতি অর্থবছরের প্রথম পাঁচ মাসে রপ্তানিতে প্রায় ১৩ শতাংশ প্রবৃদ্ধি হয়েছে। এটি দেশের বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভকে কিছুটা স্থিতিশীল রাখার ক্ষেত্রে সহায়ক হয়েছে। তবে, বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ আগের তুলনায় কিছুটা কমে ২০ বিলিয়ন ডলারের আশপাশে রয়েছে।
এভাবে, রেমিট্যান্স এবং রপ্তানি প্রবৃদ্ধি বাংলাদেশের অর্থনীতির জন্য ইতিবাচক ভূমিকা পালন করছে, তবে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের পরিস্থিতি আরও মনিটর করা প্রয়োজন।