টিসিবির বাজারদরের সর্বশেষ তথ্য বলছে, গত এক মাসে প্রায় ৪ শতাংশ দর কমেছে। তবে এক বছরের ব্যবধানে এখনও প্রায় ৪৯ শতাংশ দর বেশি।
কারওয়ান বাজারের তুহিন জেনারেল স্টোরের স্বত্বাধিকারী রায়হান বলেন, ছোলার কেজি কয়েক দিন আগে ১৪০ টাকা উঠেছিল। তবে এখন কমে ১৩০ টাকায় এসেছে।
বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের তথ্য বলছে, দেশে ছোলার চাহিদা বছরে ১ লাখ ৫০ হাজার টন। রমজানে চাহিদা থাকে এক লাখ টন। তবে আমদানিকারকরা এ তথ্য মানতে রাজি নন।
তাদের মতে, দেশে প্রতিবছর ছোলার চাহিদা দুই লাখ টনের মতো। শুধু রমজানেই দরকার হয় এক লাখ থেকে ১ লাখ ২০ হাজার টন। দেশে বছরে মাত্র পাঁচ-সাত হাজার টন উৎপাদন হয়। ফলে চাহিদার প্রায় পুরোটাই আমদানি করতে হয়।
ব্যবসায়ীরা জানান, অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে সবচেয়ে বেশি ছোলা আমদানি হয়। পাশাপাশি ভারত, কানাডা, পাকিস্তান, ইথিওপিয়া, রাশিয়া, ইউক্রেন, তানজানিয়া, মিয়ানমার থেকেও আমদানি হয়। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে অস্ট্রেলিয়া, কানাডা ও ভারত থেকেই বেশি আমদানি হচ্ছে। জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) থেকে জানা গেছে, গত জুলাই-অক্টোবরে ছোলা আমদানি হয়েছে ২ হাজার ৬৮২ টন। গত বছরের একই সময়ে আমদানি হয়েছিল ১১ হাজার ৩৬৬ টন। এ সময় আমদানি কম হওয়াকে অস্বাভাবিক মনে করছেন না ব্যবসায়ীরা। তাদের মতে, জানুয়ারিতে পুরোদমে রোজার জন্য ছোলা আমদানি হবে। ফলে সংকট হবে না।
বাংলাদেশ ডাল ব্যবসায়ী সমিতির যুগ্ম সম্পাদক ও আফজাল হোসেন অ্যান্ড সন্সের স্বত্বাধিকারী সেলিম হোসেইন বাবু বলেন, জানুয়ারিতে সবাই ছোলা আমদানি শুরু করবে। অস্ট্রেলিয়াতে ছোলার মৌসুম জানুয়ারি। তখন আমদানিকারকরা বিভিন্ন দেশের দর পর্যালোচনা করবেন। যে দেশে কম পাবেন, সেখান থেকেই আনবেন। তবে ব্যাংক ডলারের ন্যায্য দর দিলে এবং ব্যবসায়ীরা সময়মতো এলসি খুলতে পারলে আমদানি বাড়বে।
তিনি বলেন, অস্ট্রেলিয়া থেকে ছোলা আনতে এক-দেড় মাস লাগে। তবে ভারত থেকে দ্রুত ছোলা আমদানি করা যায়। এখন ভারতের সঙ্গে টানাপোড়েন চলছে। সেখান থেকে এবার আমদানি করা যাবে কিনা, তা সময়ই বলে দেবে।
খাতুনগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ও বিএসএম গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল বশর চৌধুরী বলেন, আমদানিকারকরা বসে নেই। সবাই কম-বেশি আমদানি করছেন। তবে রোজার আগে এলসি খোলা স্বাভাবিক থাকলে সংকট হবে না। সরবরাহ পর্যাপ্ত থাকলে দামও বাড়বে না, বরং কমতে পারে।
এ ব্যাপারে কনজুমারস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (ক্যাব) সহসভাপতি এস এম নাজের হোসাইন বলেন, আমদানি বাড়াতে এলসি সহজ করতে হবে। তবে রোজার আগে কিছু ব্যবসায়ী কারসাজির চেষ্টা করেন। সেজন্য বাজার তদারকি জোরদার করতে হবে। এ ছাড়া ক্রেতারও একসঙ্গে বেশি পণ্য কেনা থেকে বিরত থাকা উচিত।